শীতকাল আসন্ন, সকালে এখন রোজ কুয়াশা পড়ছে। আর কিছুদিন পরই খেজুরের রস খাওয়া শুরু হবে সাথে মজাদার ভাপা পিঠা। শীতকাল মানেই যেনো প্রকৃতির এক অদ্ভুত রহস্যময়তা।
তবে ছাদবাগানীদের জন্যও শীতকাল ‘রহস্য’ থেকে কম নয়। প্রতিবছর অক্টোবর মাসে মাঝামাঝী থেকে মার্চ মাসের মাঝামাঝী পর্যন্ত শীতের একটা আবেশ থাকে।
আর এই সময় গাছের স্ট্রেস হরমোন (stress hormone) বেড়ে যায় আর গাছের গ্রোথ হরমোন (growth hormone) গুলোর পরিমাণ কমে যায়। গাছের এই অবস্থাকে বলা হয় ডরমেন্সি পিরিয়ড (Dormancy period)।
অক্সিন হরমোন (auxin hormone) হচ্ছে গাছের একটি গ্রোথ হরমোন। গাছের সার্বিক বৃদ্ধিতে এই হরমোন বেশ ভালো কাজ করে। কিন্তু এই হরমোন টি আবার তাপমাত্রা এবং দিন-রাতের দৈর্ঘ্যের সাথে সম্পৃক্ত। আর শীতকালে তাপমাত্রা কমার সাথে সাথে গাছে এই হরমোনের উৎপাদন কমে যায়। আর পাশাপাশি গাছে তখন বেড়ে যায় স্ট্রেস হরমোন। আর এই স্ট্রেস হরমোনের নাম হচ্ছে অ্যাবসিসিক এসিড (abscisic acid)। প্রায় সকল গাছের তখন গাছের পাতা ঝরে যায়। কিছু গাছের পাতা সম্পূর্ণ ঝরে যায়। আর কিছু গাছের পাতা আংশিক ঝরে। তবে বেশীর ভাগ গাছই তখন রেস্টে (rest) – এ থাকে। আর এই সময়ই গাছে বেশ কিছু fungas infection দেখা দেয়। যেমন: ডাই ব্যাক, গ্যামোসিস, ক্যানকার, রাস্ট, অ্যানথ্রাক্স, স্কাব ইত্যাদি।
আর পোকামাকড়:-এফিড, জ্যাসিড, মাকড়, সাদা মাছি, থ্রিপস, ইত্যাদির তখন তো ঈদ আয়োজন চলে। মাটিতে আস্তে আস্তে নেমাটোড এর বংশবৃদ্ধি পেতে থাকে।
তাই শীতকালের শুরুতে আপনার ছাদবাগান ভালো রাখতে বেশ কিছু সাধারণ পদক্ষেপ নিতে হবে।
ছাদ বাগানের জন্য আবশ্যকীয় পদক্ষেপ:
যেসব ফল গাছ শীতকালে কম বৃদ্ধি পায়, সেসব গাছের গোড়ায়, অক্টোবর মাসের মাঝামাঝীতে ভালো মত জৈব সার প্রয়োগ করতে হবে।
কারণ এরপরই গাছ গুলো আস্তে আস্তে ডরমেন্সিতে চলে যাবে। বছরব্যাপী তার শরীরের উপর যে ধকল গিয়েছে এতে করে তার একটা পূরণ শুরু হবে।
জৈব সার হিসেবে:- কম্পোস্ট, হাড়ের গুড়া, নিম খৈল, শিং কুচি, ডিমের খোসার গুড়া, প্রয়োজন মতো চুন, শঙ্খের গুড়া, কলার খোসা, খোসার গুড়া,পাতা পঁচা সার, কিচেন ওয়েস্ট ইত্যাদি প্রয়োগ করা যেতে পারে।
*নিয়মিত ছত্রাকনাশক এবং কীটনাশক প্রয়োগ করলে আপনার বাগান মোটামুটি ভালো থাকবে।
★★ বিশেষ সতর্কতা:– প্রতিগাছের এবং সবজির পরিচর্যা ভিন্ন।এখানে শুধু সাধারণ পরিচর্যার কথা বলা হয়েছে।
তবে শীতকালে গাছে কেউ PGR(plant growth regulator) ব্যবহার করার পূর্বে আপনার ঐ গাছে শীতকালে সেটি প্রয়োগ করা যাবে কিনা, সে সম্পর্কে জেনে এরপর প্রয়োগ করবেন।